মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪

সমুদ্র থেকে কার্বন সরাতে নতুন প্রযুক্তি

 

প্রতিবছর প্রায় এক হাজার টন কার্বন যুক্ত হয় বায়ুমণ্ডলে। বায়ুমণ্ডলে থাকা ৩০০ কোটি টন কার্বনই শোষণ করে নেয় সমুদ্র। আর তাই সমুদ্র থেকে কার্বন অপসারণে ইকুয়েটিক প্রসেস নামের একটি অভিনব কার্বন অপসারণ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা। ২০২৩ সালের সেরা আবিষ্কার হিসেবে এই প্রযুক্তিকে বিবেচনা করা হচ্ছে। আর তাই নতুন এ প্রযুক্তি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে। এরই মধ্যে নতুন প্রযুক্তিনির্ভর প্ল্যান্ট তৈরির কাজ শুরু করেছে সিঙ্গাপুর। আগামী বছরের মধ্যেই প্ল্যান্টটি চালু করা হতে পারে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন বিশ্বের বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে নিরাপদ স্তরে রাখতে ২০৫০ সালের মধ্যে কমপক্ষে পাঁচ শ কোটি মেট্রিক টন কার্বন অপসারণ করতে হবে। আর তাই সমুদ্র থেকে কার্বন অপসারণের জন্য নতুন প্রযুক্তিনির্ভর একটি প্ল্যান্ট তৈরি করছে সিঙ্গাপুরের জাতীয় পানি সংস্থা পিআইবি। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস’ ও ‘ইকুয়েটিক’ প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় প্ল্যান্টটি তৈরি করা হচ্ছে। সমুদ্র থেকে প্রায় চার হাজার টন কার্বন ডাই–অক্সাইড অপসারণ করতে সক্ষম প্ল্যান্টটি তৈরি করতে খরচ হবে প্রায় দুই কোটি মার্কিন ডলার।
সমুদ্র থেকে কার্বন ডাই–অক্সাইড অপসারণের নতুন এই প্রযুক্তি নিয়ে অনেকে আশাবাদী হলেও এর মাধ্যমে নতুন পরিবেশগত ঝুঁকি তৈরি হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিঙ্গাপুরের বিজ্ঞানী পাং চি মেং বলেন, সমুদ্রের পানি প্রতি ইউনিট আয়তনে বাতাসের তুলনায় প্রায় ১৫০ গুণ বেশি কার্বন ডাই–অক্সাইড ধারণ করে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে সিঙ্গাপুর ও লস অ্যাঞ্জেলেসের বন্দরে পরীক্ষামূলকভাবে কার্বন অপসারণের প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি প্ল্যান্ট প্রতিদিন প্রায় ১০০ কিলোগ্রাম কার্বন ডাই–অক্সাইড অপসারণ করছে। প্রক্রিয়াজাত পানি পুনরায় সমুদ্রে ফেলার আগে সেগুলো বিশুদ্ধ করা হয়। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ২০৪৫ সালের মধ্যে সিঙ্গাপুর কার্বনশূন্য লক্ষ্য অর্জন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র: টাইম ডটকম

আমাজন জঙ্গল বিশ্বজুড়ে এক রহস্য আর বিস্ময়ের নাম----



 আমাজন জঙ্গল বিশ্বজুড়ে এক রহস্য আর বিস্ময়ের নাম।

এই জঙ্গল বিশ্বের ৭ম আশ্চর্যের একটি।
১! এর আয়তন ৫৫,০০,০০০ বর্গ কিলোমিটার (২১,২৩,৫৬২ বর্গমাইল)
★ তবে অবাক করা বিষয় হলো, ৩৭ টি বাংলাদেশ একত্র করলে এই জঙ্গলের সমান হবে।
২! এটি বিশ্বের নয়টি দেশজুড়ে বিস্তৃত ৬০% ব্রাজিলে,১৩% পেরুতে, বাকি ৭ টি কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা, ইকুয়েডর, বালিভিয়া, গায়ানা, সুরিনাম, ফরাসি গায়ানা।
৩! পৃথিবীর প্রায় 20% অক্সিজেন আসে এ জঙ্গল থেকে।
৪! এই বনে প্রায় ৩৯০ মিলিয়ন বৃক্ষ রয়েছে এগুলা আবার ১৬০০০ হাজার প্রজাতিতে বিভক্ত।
৫! পৃথিবী জুড়ে যে রেইনফরেস্ট রয়েছে তার ৫০% ই এই জঙ্গলে।
৬! এই বনে ৩০০ এরও বেশি আদিবাসি আছে। মোট আদিবাসি নৃগোষ্ঠীর সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি।
★তবে মজার বিষয় হলো, এদের মধ্যে এমনও আদিবাসী আছে যাদের বর্তমান আধুনিক বিশ্বের সাথে এখন পর্যন্ত কোনো যোগাযোগই হয়নি৷
৭! এই বনে ৪৫ লাখ প্রজাতির পোকামাকড়, ৪২৮ প্রজাতির উভচর, ৩৭৮ প্রজাতির সরিসৃপ, ৪২৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে।
(সংগ্রহীত)

ওয়াকিং পাম (হেটে বেড়ায় যে গাছ)

 

বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন অরণ্যের মধ্যে ছড়িয়ে আছে এমন কিছু গাছ যার বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আজ সত্যিই আমাদের অবাক করে। এরকমই একটি বিশেষ উদ্ভিদের কথা আজ আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরব। আসুন জেনে নিই এই বিশেষ উদ্ভিদের সম্বন্ধে কিছু তথ্য।
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সুমাকো বায়োস্ফিয়ার। মূলত এই বায়োস্ফিয়ারেই বাস ক্যাশাপোনা পাম গাছের। সত্তরের দশকের শুরুর দিকে এই সংরক্ষিত অরণ্যে গবেষণা করতে গিয়ে আশ্চর্য এই উদ্ভিদ প্রজাতির সন্ধান পান স্লোভাক ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সেসের গবেষক পিটার ভ্রানস্কি।
এই সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে শুধু এই বিশেষ উদ্ভিদ প্রজাতিই নয় তার সঙ্গে ব্যাঙ, আরশোলা-সহ একাধিক নতুন প্রাণী প্রজাতিরও আবিষ্কার করেছিলেন তিনি। ভ্রানস্কি সে-সময় দাবি করেন, তাঁর আবিষ্কৃত এই নতুন উদ্ভিদটি তার নিজের অবস্থান পরিবর্তন করতে সক্ষম। অবশ্য তাঁর এই দাবিকে সে-সময় সাদরে গ্রহণ করেনি বিজ্ঞানীমহল। অনেকেই তা হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
সেই গবেষণার উপরে ভিত্তি করে ১৯৮০-র দশকে ইকুয়েডরের এই আমাজনিয়ান অরণ্যে পুনরায় একটি অভিযান চালান জীববিজ্ঞানী জন এইচ বোদলে এবং তার দলবল। তিনিই দীর্ঘদিন এই অরণ্যে অবস্থান করে পর্যবেক্ষণ করেন এই বিশেষ গাছের গতিবিধি এবং তাদের জীবনপদ্ধতি। বোদলের নেপথ্যেই সর্বপ্রথম বৈজ্ঞানিকভাবে গৃহীত হয় চলমান উদ্ভিদের অস্তিত্বের কথা। এই জীববিজ্ঞানীর কথাতেই এই বিশেষ উদ্ভিদটিকে ঘিরে প্রথম বিশ্ব বিজ্ঞান মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এই গানটি সাধারণত ১৮-২০ মিটার বা ৬০-৭০ ফুট লম্বা হতে পারে। অবশ্য ইকুয়েডরের এই উদ্ভিদ প্রজাতির বাহ্যিক গঠন অনেকটা সুন্দরবনের সুন্দরী জাতীয় ম্যানগ্রোভ গাছের মতো। আসলে সুন্দরী ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ হওয়ায় যেমন শ্বাসমূল দেখা যায় তাদের দেহে, ঠিক তেমনই দেখা যায় ঠেসমূলের উপস্থিতিও। ইকুয়েডরের এই ‘ওয়াকিং পাম’-এর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা অনেকটা একইরকম।
ইকুয়েডরের এই বিশেষ অঞ্চলের মাটি আলগা হওয়ায় এবং সেখানে মাটির জলধারণ ক্ষমতা অত্যন্ত কম। পাশাপাশি গভীর অরন্যের সব জায়গায় সূর্যালোক প্রবেশ করতে না-পারায় এই বিশেষ পাম জাতীয় উদ্ভিদটি অবস্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়। ক্রমাগত এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে নিতেই ‘ওয়াকিং পাম’-এর শিকড়ের দৈর্ঘ্য অন্যান্য গাছের থেকে অনেকটাই বড়ো। আয়তন বা পরিধির দিক থেকে দেখতে গেলেও তা যথেষ্টই মোটা।
এগুলি দেখতে অনেকটা হাতির শুঁড়ের মতো। পাশাপাশি অত্যন্ত দ্রুত নতুন নতুন ঠেসমূল তৈরি করে সক্ষম ‘ওয়াকিং পাম’। একদিকে যেমন এই উদ্ভিদ নতুন উদ্ভিদ তৈরি করে, তেমনই পুরানো ঠেসমূল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় গাছের দেহ থেকে। অন্যদিকে গাছের মূল কাণ্ড ধীরে ধীরে সরে যায় তার মূল অবস্থান থেকে। এভাবেই দিনের পর দিন অল্প অল্প করে স্থান পরিবর্তন করে এই গাছ।
জীববিজ্ঞানীদের বিভিন্ন পরিসংখ্যান ও গবেষণা বলছে প্রতিদিন দেড় থেকে দু সেন্টিমিটার সরণ হয় এই জাতীয় গাছের। কখনও কখনও সেটা আবার দিনে ৩ সেন্টিমিটার পর্যন্তও অবস্থান পরিবর্তন করতে সক্ষম হয় ওয়াকিং পাম। বছরের হিসাবে এই দূরত্ব কম নয় মোটেই। প্রতিবছর কমপক্ষে প্রায় নিজের অবস্থান ২০ মিটার পর্যন্ত সরে যায় এই গাছ।
তবে শুধুমাত্র ওয়াকিং পামই নয়, ইকুয়েডরের এই সুমাকো বায়োস্ফিয়ারে রয়েছে এমন বেশ কিছু আশ্চর্য গিরগিটি এবং ব্যাঙের প্রজাতিও। যা এই অরণ্য ছাড়া বিশ্বের আর কোনো প্রান্তেই দেখতে পাওয়া যায় না। আর সেই কারণেই একুশ শতকের শুরুতে ইকুয়েডরের এই সংরক্ষিত অরণ্যকে " হার্ট অফ দ্য ইউনেস্কো " ইউনেস্কো। প্রাণী ও উদ্ভিদ সবকিছু মিলিয়ে এই অরণ্য যেন আক্ষরিক অর্থেই জীববিজ্ঞানের এক আশ্চর্য জাদুঘর।
(ছবি ও লেখা কালেক্টেড)

অথর্ব এক প্রজন্ম ......

 

আবারও এক প্রজন্ম আসছে যারা টিপ সই ছাড়া স্বাক্ষর করতে পারবে না।
আমাদের তরুণ প্রজন্মের প্রায় 70% ফুড ব্লগিংকে ফ্যাশন ও পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছে বা নিচ্ছে! অন্যান্য দেশের ছেলেমেয়েরা যখন বিস্কিট আর পানি খেয়ে চাকরির চেষ্টায় লেগে আছে, অথবা খেলায় বা ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য ছুটছে ঠিক তখন আমাদের গর্বিত বেকাররা বিরিয়ানির হাঁড়ির পিছনে পিছনে ক্যামেরা নিয়ে ছুটছে কুকুরের মতো, আর প্লেটে বিরিয়ানি পড়লেই ফ্রিতে খাবার পাওয়ার আশায় সমবেত কণ্ঠে গাইছে "ঝরে ঝরে পড়ছে-ঝরে ঝরে পড়ছে!সেইসঙ্গে একটা জাতির ভবিষ্যতও ঝরে যাচ্ছে অকালে...
ফেসবুক খুললেই আজকাল শুধু রিল আর সেই রিল জুড়ে শুধু তুলতুলে মাটোন- জুসি বিফ-থলথলে পেটি মুচমুচে ফিসফ্রাই আর দগদগে বিরিয়ানিতে লেগে থাকা ঘিয়েভাজা ল্যাল্ল্যালে ছেঁড়া মাংস আর তার ওপর মগে করে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া খয়েরি রঙের কি (ঘি) মনে হয় কানের নিচে এক থাপ্পড় মারি
🤪

অদ্ভুত বিষয় হলো কিছু ফকিন্নির বাচ্চা বিয়ে বাড়ি যেয়েও লেগে পড়ছে ফুড ব্লগিং করতে!

সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

!!!বিশ্বাস করুন আর নাই বা করুনঃ বাংলাদেশে এই নামের নদীগুলো আছে!!!

 



চাঁপাইনবাবগঞ্জে আছে ‘পাগলা’ নদী আর কুমিল্লায় আছে ‘পাগলি’। 'সতা’ নদ আছে নেত্রকোনায়, ‘সতি’ আছে লালমনিরহাটে, 'মহিলা' নদী দিনাজপুরে, পুরুষালি’ নদী ফরিদপুরে, ‘মাকুন্দা’ আবার সিলেটে। সিলেটে আছে ‘ধলা’ নদী আর দিনাজপুরে আছে ‘কালা’ নদী, হবিগঞ্জে আছে ‘শুঁটকি’ নদী, পঞ্চগড়ে আছে ‘পেটকি’, আবার পাবনায় আছে ‘চিকনাই’ নদী। ‘বামনী’ নদী আছে নোয়াখালীতে, ‘ফকিরনি’ আছে নওগাঁয়।

চুয়াডাংগায় ‘মাথাভাঙ্গা’, নীলফামারীতে ‘চুঙ্গাভাঙ্গা’, হবিগঞ্জে ‘হাওরভাঙ্গা’, সাতক্ষীরায় ‘হাঁড়িয়াভাঙ্গা’, পটুয়াখালীতে ‘খাপড়াভাঙ্গা’, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘নাওভাঙ্গা’, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আছে ‘ছিটিভাঙ্গা’। বাগেরহাটে ‘পুঁটিমারা’ লালমনিরহাটে ‘সিঙ্গীমারা’, খুলনায় ‘শোলমারা, খাগড়াছড়ির ‘গুইমারা’, সাতক্ষীরায় ‘সাপমারা’, পঞ্চগড়ে ‘ঘোড়ামারা’, হবিগঞ্জে ‘হাতিমারা', চুয়াডাঙ্গায় ‘ভাইমারা’ ও সুনামগঞ্জে ‘খাসিয়ামারা’ নামে নদী আছে।

ফরিদপুরে আছে ‘কুমার’, চট্টগ্রামে আছে ‘ধোপা’, নওগাঁয় আছে ‘গোয়ালা’, আর সিরাজগঞ্জে আছে ‘গোহালা’। ঢাকী’ আছে খুলনায় আর ‘বংশী’ নদী আছে সাভারে। 'লুলা’ নদী সিলেটে, ‘খোড়া’ নদী নীলফামারী, ‘বোকা’ নদী ছাতক আর ‘খ্যাপা’ নদী সিলেটে। আবার মগরা’ নদী নেত্রকোনা, ‘ফটকি’ নদী মাগুরা, মঘা’ নদী ময়মনসিংহ, ‘ল্যাঙ্গা’ নদী গাইবান্ধা, ‘হাবড়া’ নদী সাতক্ষীরা, এবং ‘হোজা’ নদী রাজশাহী।

লঙ্কা’ নদী বরিশালে, ‘গুড়’ নদী নাটোরে। ‘ক্ষীর’ নদী ময়মনসিংহে, ‘লোনা’ নদী ঠাকুরগাঁওয়ে। ‘নুনছড়া’ আছে সিলেটে, ‘কালিজিরা’ বরিশালে, সুনামগঞ্জে আছে ‘লাউগাং’ আর ‘লাচ্ছি’ নদী আছে ঠাকুরগাঁওয়ে। পটুয়াখালীতে আছে ‘পায়রা’, খুলনায় আছে ‘ময়ূর’, দিনাজপুরে আছে ‘শুক’ (টিয়া), সিলেটে ‘সারি’ (শালিক), বাগেরহাটে আছে ‘বগী’, সিলেটে ‘কুড়া’, রাজশাহীতে আছে ‘কোয়েল’, রাজবাড়ীতে ‘চন্দনা’, পঞ্চগড়ে আছে ‘ডাহুক’, সুনামগঞ্জে ‘ডাহুকা’, মৌলভীবাজারে আছে ‘মুনিয়া’।

পাবনায় আছে ‘কমলা’, সুনামগঞ্জে ‘খুরমা’, কুমিল্লায় ‘কালাডুমুর’ নদী। সিলেটের জকিগঞ্জে আছে ‘তাল’ ও ‘কুল’ নামে দুই গাং। ফেনীতে আছে ‘মুহুরী’, মৌলভীবাজারে ‘জুড়ী’, রংপুরে আছে ‘কাঠগড়া’ নদী। আর যশোরে আছে ‘টেকা’, বরিশালে ‘পয়সা’, সিরাজগঞ্জে ‘দশসিকা’, জামালগঞ্জে আছে ‘দশানী’ নদী। বিষখালী নদী ঝালকাঠি/বরগুনায় আর নির্বিষখালী’ নদী মাগুরায়। বালু নদী গাজীপুরে, বালিখাল হবিগঞ্জে, বালুখালী চট্টগ্রামে আর বালুভরা নওগাঁয়।

'ঘাগড়া' আছে পঞ্চগড়ে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘ঘুঙ্গুর’, আর নরসিংদীতে ‘কাঁকন’। আবার ‘ছেঁড়া’ নদী খুলনায় ‘ফুটা’ নদী টাঙ্গাইলে। ভোলায় ‘কলমি’, শরীয়তপুরে ‘পালং’, মাদারীপুরে ‘ময়নাকাঁটা’, বরিশালে ‘লতা’ আর সিলেটে আছে ‘শ্যাওলা’ নদী। কলকলিয়া হবিগঞ্জে, হলহলিয়া কুড়িগ্রামে, ঝনঝনিয়া গোপালগঞ্জে, ঝপঝপিয়া খুলনায়, জিরজিরা জামালপুরে, গড়গড়া গাজীপুরে। ধন্যবাদ।

তথ্যসূত্রঃ
ক। বাংলাদেশের নদনদী- ম. ইনামুল হক
খ। উইকিপিডিয়া
গ। অন্তর্জাল থেকে।

বরগুনা জেলা

 



বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী জেলা বরগুনা। এই জেলার অভ্যন্তরে ছড়িয়ে - ছিটিয়ে রয়েছে নদীর পর নদী। নদীতে নৌকা নিয়ে মাঝি চলে যায় দূরদেশে। নীল বাদাম ওড়ায় নৌকাতে। ঢেউয়ের তালে নৌকা হেলেদুলে চলে যায়। এ দৃশ্য দেখে অভিভূত হতে হয়। মাঝির কন্ঠে গান শোনা যায়..... মাঝি বাইয়া যাওরে অকূল দরিয়ার মাঝে আমার ভাঙা নাওরে... আরে কত কী গান।
বরগুনা দক্ষিণাঞ্চলের জেলা। এর উত্তরে ঝালকাঠি জেলা, বরিশাল জেলা, পিরোজপুর জেলা ও পটুয়াখালী জেলা, দক্ষিণে পটুয়াখালী জেলা ও বঙ্গোপসাগর, পূর্বে পটুয়াখালী জেলা, পশ্চিমে পিরোজপুর জেলা ও বাগেরহাট জেলা। জেলা সদরে বরগুনা শহর। একটি পৌরসভা। ৯ ওয়ার্ড ও ১৮ মহল্লা ও বেতাগী উপজেলা।
⚫
বরগুনা জেলার ইতিহাস
১৯৬৯ সালে বরগুনা পটুয়াখালী জেলার অধীনে একটি মহকুমা হয় ।১৫ ফাল্গুন ১৩৮৯ বঙ্গাব্দে (১৯৮৪ সাল) দেশের প্রায় সকল মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হলে বরগুনা জেলায় পরিণত হয়।
বরগুনা নামের ইতিহাসের সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য না পাওয়া গেলেও জানা যায় যে, উত্তরাঞ্চলের কাঠ ব্যবসায়ীরা এতদ্ঞ্চলে কাঠ নিতে এসে খরস্রোতা খাকদোন নদী অতিক্রম করতে গিয়ে অনুকূল প্রবাহ বা বড় গোনের জন্য এখানে অপেক্ষা করত বলে এ স্থানের নাম বড় গোনা। কারো মতে আবার স্রোতের বিপরীতে গুন(দড়ি) টেনে নৌকা অতিক্রম করতে হতো বলে এ স্থানের নাম বরগুনা । কেউ কেউ বলেন , বরগুনা নামক কোন প্রতাপশালী রাখাইন অধিবাসীর নামানুসারে বরগুনা । আবার কারো মতে বরগুনা নামক কোন এক বাওয়ালীর নামানুসারে এ স্থানের নামকরণ করা হয় বরগুনা ।
⚫
বরগুনার দর্শনীয় স্থান।
বরগুনা একটি ঐতিহাসিক প্রাচীন জেলা। বরগুনা জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ..... সোনা কাটা সমুদ্র সৈকত, টেংরা গিরি ইকোপার্ক, লাল দিয়া বন, ফাতরার বন, বিবি চিনি মসজিদ, হরিণ ঘাটা, নিদ্রা, বেতাগী, মোকামিয়া, হোসনাবাদ, বামনা, বুকাবুনিয়া, বড় মজুমদার, কাজীরবাদ, দাওয়াতলা,সরিষামড়ি, বরবগী, গুলশাখালী, কুকুয়া, কুঁড়ির চর, রায়হান পুর, কাকচিড়া, নাচনাপাড়া, কালমেঘা, কাঁঠাল তলী, বড়বিঘাই, বড় পাঙ্গাশিয়া, ধানখালী, হলদিয়া, লালদিয়া ইত্যাদি।
আসুন জেনে নেই বরগুনা জেলার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে.....
⚫
টেংরাগিরি ইকোপার্ক..
বরগুনা জেলার তালতলি উপজেলা থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে সোনা কাটা ইউনিয়নে সুন্দর বনের একাংশে টেংরাগিরি অভায়রন্য গড়ে তোলা হয়েছে। টেংরাগিরি অভয়ারণ্যের পাশেই রয়েছে আর একটি আকর্ষনিয় পর্যটন কেন্দ্র সোনা কাটা সমুদ্র সৈকত। সুন্দর বনের পরেই এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় শ্বাসমূলীয় বন যা দিনে দুইবার জোয়ার ভাটায় প্লাবিত হয়। লবনাক্ত ও মিষ্টি মাটির অপূর্ব মিশ্রণে এখানে এখনো টিকে রয়েছে হাজার প্রজাতির বিলুপ্ত গাছ, পশুপাখি ও সরীসৃপ। প্রায় ৪০৪৮ হেক্টর জায়গা জুরে পূর্ব পশ্চিমে ৯ কিলোমিটার ও উত্তর দক্ষিণে ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত এই বনের বিস্তৃতি।
⚫
শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত...
অথৈ সাগরে ঢেউ আর সবুজ ঝাউ বনে ঘেরা বরগুনা জেলার তালতলি উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের নলবুনিয়ায় অবস্থিত এক দৃষ্টিনন্দন সৈকতের নাম শুভ সন্ধ্যা। পায়রা, বিশ খালি ও বলেশ্বর নদীর মিলনস্থলের বৈচিত্র্য বাড়িয়ে তুলেছে প্রায় ৪ কিলোমিটার লম্বা বেলাভূমি শুভ সন্ধ্যা। তালতলি উপজেলা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে এটির অবস্থান। শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের বিশুদ্ধ বাতাস, সমুদ্রের কল - কল আওয়াজ, নির্জন প্রকৃতি ভ্রমণ পিপাসুদের সহজেই আকর্ষণ করে।
⚫
লাল দিয়া বন বা সমুদ্র সৈকত...
লাল দিয়া সমুদ্র সৈকত বরগুনা জেলার পাথর ঘাটা উপজেলার দক্ষিণে অবস্থিত। লাল দিয়ার বনের পূর্ব দিকে বিশ খালি পশ্চিম দিকে বলেশ্বর নদী বয়ে গেছে। দুই নদী এবং সাগরের মোহনায় ঘেরা এ বনের পূর্ব প্রান্তে সমুদ্র সৈকতের অবস্থান। লালদিয়া বনের পাখির কিচির মিচির, সমুদ্রের বুনো সৌন্দর্য, লাল কাকরার হেটে চলা আর গাঙচিল ভ্রমণ পিপাসুদের মনকে প্রকৃতির সাথে একাত্ম করে দেয়।
⚫
হরিণ ঘাটা পর্যটন কেন্দ্র...
প্রাকৃতিক বন আর সাগরের হাতছানিতে মুগ্ধ ঘুরে আসতে পারেন দক্ষিণ বরগুনা জেলায় অবস্থিত হরিণ ঘাটা পর্যটন কেন্দ্র থেকে। জানা অজানা গাছ আর বন্য প্রাণীর বিচরণ স্থান এ বন সুন্দর বনেরই একটা অংশ। যান্ত্রিক কোলাহলের বাহিরে পাখির কলকাকলীতে ও প্রকৃতির নৈসর্গিকতায় দেখা হয়ে যেতে পারে হরিণ, বানর, শূকর সহ আরও অনেক বন্য প্রাণী। অপূর্ব এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য রয়েছে ওয়াচ-টাওয়ার। বনের মধ্যে তৈরি রাস্তা দিয়ে পর্যটকরা বনের ভিতরে ঘুরে দেখতে পারে।
⚫
বিবি চিনি মসজিদ....
বাংলাদেশ মোঘল স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন বিবি চিনি মসজিদ। বরগুনা জেলার বেতাগি উপজেলার বিবি চিনি ইউনিয়নে ছোট টিলার উপর নির্মাণ করা হয়েছে এই মসজিদ। এই মসজিদটি বেতাগি শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। জানা যায় হযরত শাহ নেয়ামত উল্লাহর কন্যা চিনি বিবি ও ইছা বিবির নাম অনুসারে বিবি চিনি গ্রাম ও মসজিদের নামকরণ করা হয়। মসজিদটির দৈর্ঘ্য প্রস্থ ৩৩ ফুট এবং দেয়াল ৬ ফুট চওড়া, উচ্চতায় এটি প্রায় ২৫ ফুট।
এরপর আসি সবথেকে আকর্ষণের যায়গায়....
⚫
রাখাইন পল্লী...
বরগুনা জেলার তালতলি উপজেলায় রয়েছে একাধিক রাখাইন পল্লী। আরাকান থেকে বামার বা বারমিজদের দ্বারা বিতারিত হয়ে রাখাইনরা এ অঞ্চলে আশ্রয় নেয়। বন জঙ্গল কেটে তারাই প্রথম এ অঞ্চলকে বসবাস এবং ফসল আবাদের উপযোগী করে গড়ে তোলে। লবনাক্ত পানি পানের উপযোগী না হওয়ায় তারা বাড়ির পাশে কুয়া খনন করে বৃষ্টির জল সংগ্রহ করে রাখতো এবং বন্য পশুর হাত থেকে বাচতে টোং বা মাচায় ঘর তৈরি করতো।
তাদের আত্মারক্ষার এ পদ্ধতি এখন রীতিতে পরিনত হয়ছে। তারা তাদের শত বছরের সংস্কৃতি ধরে রেখেছে।
শত বছরের পুরনো বৌদ্ধ মঠ, বিক্ষু মুর্তি এ অঞ্চলে এখনো বিদ্যমান।
⚫
উল্লেখযোগ্য খাবার।
বরগুনা জেলা নারিকেল ও সুপারির জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও বরগুনার বিখ্যাত খাবার -চুইয়া পিঠা, চ্যাবা পিঠা, মুইট্টা পিঠা, আল্লান, বিসকি, তালের মোরব্বা, ইত্যাদি ।
⚫
চুই পিঠা বানানোর পদ্ধতি...
পানি ফুটিয়ে চালের গুঁড়া দিয়ে ডো করে নিন। চুলা থেকে হাঁড়ি নামিয়ে কিছুটা ঠান্ডা করে বেশ ভালোভাবে ডো/কাই ময়ান দিয়ে নিন। ময়ান দেয়া হলে অল্প করে ডো নিয়ে লেচি কেটে সেমাই বানিয়ে নিন।
সব বানানো হলে চুলায় দুধের হাঁড়ি বসান। দুধ ফুটে উঠলে এক কাপ দুধ উঠিয়ে রাখুন। এই এক কাপ দুধ ঠান্ডা করে তাতে গুঁড় গলিয়ে ছেঁকে রাখুন।
এইবার দুধের সাথে কনডেন্সড মিল্ক, এলাচ গুঁড়া ও স্বাদমতো চিনি দিয়ে জ্বাল করুন। চিনির পানি শুকিয়ে গেলে অল্প অল্প করে তৈরি করে রাখা সেমাই মিশিয়ে নিন। পছন্দমতো ঘন হলে নামিয়ে নিন। সেমাই কুসুম গরম হলে গুঁড়-দুধের মিশ্রণ মিশিয়ে নিন।
** ঠান্ডা হলে কিসমস ও পেস্তা কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
⚫
বিসকি রান্নার পদ্ধতি...
প্রথমে চাল ভেজে ভিজিয়ে রাখতে হবে ২ ঘন্টা। তারপর চাল ভিজে গেলে ধুয়ে ঝুরিতে তুলে রাখতে হবে। কিছু নারকেল কুরিয়ে নিতে হবে। আবার কিছু নারিকেল কিউব করে কেটে নিতে হবে। এখন একটি পাতিলে পানি, নারিকেল, গুড় ও তেজপাতা দিয়ে ফুটাতে হবে। ফুটে উঠলে ভাজা চাল দিতে হবে। ঢেকে রান্না করতে হবে। এটা পোলাউর মত রান্না করতে হয়। যদি পানি শুকিয়ে যায় আর চাল সিদ্ধ না হয় তাহলে আবার পানি দেয়া যাবে। জর্দ্দার মত ঝর ঝরে হলে নামাতে হবে। ঠান্ডা হলে পরিবেশন করতে হবে মজাদার বিসকি।
⚫
শিরনি রান্নার পদ্ধতি....
প্রথমে ময়দা তে ঘি মাখিয়ে নিতে হবে। এবার অল্প অল্প করে দুধ মিশিয়ে ময়দাটা স্টিকি করে মাখতে হবে মাখা হয়ে গেলে এর মধ্যে চিনি মেশাতে হবে এবং কাঁঠালি কলা চটকে এর সাথে মাখিয়ে নিতে হবে।
পুরো মিশ্রণটি খুব মোলায়েম করে মাখতে হবে। এরপর এর মধ্যে শসা কুচি আপেল কুচি খেজুর বেদানা আঙ্গুর গুড়ের বাতাসা এবং মুরকি দিয়ে মাখতে হবে।
খুব ভালো মত স্মুথ ভাবে মাখা হয়ে গেলে উপর থেকে নারকেলকোরা ছড়িয়ে দিলেই রেডি হয়ে যাবে একদম প্রসাদের মত শিন্নি।
⚫
বরগুনা জেলায় যাওয়ার উপায়।
রাজধানী ঢাকা থেকে বরগুনা সদরের দূরত্ব ২৪৭ কিলোমিটার আর বিভাগীয় শহর বরিশাল থেকে ৯০ কিলোমিটার। এই জেলাটি একটি উপকূলীয় ও নদীবহুল অঞ্চল হওয়ায় এখানকার যেকোনো স্থানে আসার জন্য নৌপথ সবচেয়ে সুবিধাজনক পরিবহন ব্যবস্থা। এ ক্ষেত্রে লঞ্চ হলো সব থেকে আরাম দায়ক নৌযান। নদীর মাতাল হাওয়া, খোলা আকাশের জোস্না, পানির কল - কল শব্দ উপভোগ করতে করতে সহজেই যাওয়া যায় বরগুনা। তবে, সড়ক পথেও এখানে আসা সম্ভব; সেক্ষেত্রে কিছু বছর আগেও ফেরী পারাপার হতে হতো। কিন্তু এখন পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ায় ঢাকা থেকে সরাসরি বাস যোগে বরগুনা যাওয়া যায়। বরগুনায় রেল যোগাযোগ বা বিমান বন্দর নেই বলে এই দুটি মাধ্যমে এখানকার কোনো স্থানে আসা যায় না।
⚫
বরগুনা এসে কোথায় থাকবেন।
বরগুনায় থাকার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের কিছু সাধারণ মানের হোটেল রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে সরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকার জন্যে উন্নতমানের -
জেলা পরিষদ ডাকবাংলো - বরগুনা।
হোটেল তাজবিন - সদর।
হোটেল বে অব বেঙ্গল - সদর রোড, বরগুনা।
এই হলো আমাদের উপকূলবর্তী শহর বরগুনা। সবাইকে ঘুরে যাওয়ার অনুরোধ রইলো।
---সংগৃহীত---

পৃথিবীর ‘একমাত্র ফুটন্ত নদী



পৃথিবীর ‘একমাত্র ফুটন্ত নদী’ (Only Boiling River in the World) হল দক্ষিণ আমেরিকার পেরুর শানায়-তিমপিশকা (Shanay-timpishka), যা 'লা বম্বা' (La Bomba) নামেও পরিচিত। শানায় শব্দটির অর্থ সূর্যের তাপ এবং তিমপিশকা শব্দটির অর্থ ফুটন্ত। ৪ মাইল বা ৬.৪ কিমি দীর্ঘ এই নদীটি দক্ষিণ আমেরিকার বিখ্যাত আমাজন নদী ব্যবস্থার অন্তর্গত। শানায়-তিমপিশকা নদীটি পেরুর পুয়ের্তো ইনকা প্রদেশের মায়ানটুয়াকু অভয়ারণ্যের অন্তর্গত। নদীটি চওড়ায় প্রায় ২৫ মিটার এবং সর্বাধিক গভীরতা ৬.১ মিটার। কোনোক্রমে পিছলে গিয়ে শানায়-তিমপিশকায় পড়ে গেলে, বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ফুটন্ত জলেতে দেহ মারাত্মকভাবে পুড়ে যায় ১ সেকেন্ডেরও কম সময়ে। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস, এই নদীর নিরাময় ক্ষমতা আছে। ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে এই নদীর জল পরীক্ষা করেছিলেন ভূ-তাপীয় বিজ্ঞানী আন্দ্রেস রুজো। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন, নদীটির জলের তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি থেকে প্রায় ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠে! নদীর তীরের মাটি এতই তেতে থাকে যে সেখানে পা ফেলার জো থাকে না!
কেন এই অস্বাভাবিক তাপমাত্রা? শানায়-তিমপিশকার আশপাশে কোনো সক্রিয় আগ্নেয়গিরি নেই। কোনো ভূতাপীয় ফাটলও খুঁজে পাওয়া যায় নি। তবে, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এই নদীকে ‘সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত নদী’ বলে অভিহিত করেছে। এই নদীর তাপের উৎস সম্পর্কে বলতে গিয়ে ‘ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক’ বলেছে, এর পেছনে কাজ করছে পৃথিবীর ভূতাপীয় অবক্রম (Geothermal Gradient)। পৃথিবীর অভ্যন্তরে ক্রমবর্ধমান গভীরতার সাপেক্ষে তাপমাত্রার ক্রমবর্ধমান হারকে বলে ভূতাপীয় অবক্রম বলে। গবেষকেরা বলছেন, আমাজন অরণ্যের ওপর যে বৃষ্টি ঝরে পড়ে, সেই বৃষ্টির জল গভীর চ্যুতির মধ্য দিয়ে পৌঁছে যায় পৃথিবীর ভূত্বকের তলদেশে। আর ভূতাপীয় গ্রেডিয়েন্টের প্রভাবে ওই জল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ধারণা করা হয়, উষ্ণ প্রস্রবণের ওই উত্তপ্ত জলকে পুনরায় ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি নিয়ে আসে। এ কারণেই শানায়-তিমপিশকা নদীতে জল ফুটছে টগবগ করে।