মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী বিমান

 



পৃথিবীর সবচেয়ে বড় যাত্রীবাহী বিমান এয়ারবাস এ৩৮০-৮০০। নামটা একটু খটমটে বটে। দুই তলাবিশিষ্ট এ প্লেনের নির্মাতা এয়ারবাস কোম্পানি। প্লেনটি প্রথম উড্ডয়ন করা হয় ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল। তবে বাণিজ্যিকভাবে প্রথম কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৭ সাল থেকে। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং প্রশস্ত যাত্রীবাহী বিমান। এ বিমানের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যা অন্য বিমান থেকে একে আলাদা করেছে।

প্লেনটির দৈর্ঘ্য ৭২ দশমিক ৭ মিটার এবং উচ্চতা ২৪ দশমিক ১ মিটার। তবে প্লেনটির ডানার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি ৭৯ দশমিক ৮ মিটার। সংখ্যা দিয়ে হয়তো পুরোপুরি বুঝতে পারছেন না প্লেনটি কত বড়। জিরাফ নিশ্চয়ই দেখেছেন আপনারা। এটি দেড়টা জিরাফের উচ্চতার সমান। দুটি বোয়িং ৭৩৭এস প্লেন একটা অন্যটার ওপর রাখলে এ প্লেনের উচ্চতার সমান হবে। আর দৈর্ঘ্য একটি ফুটবলের মাঠের চেয়ে বড়।
প্লেনটি সর্বোচ্চ ৫৭৫ টন ওজন নিয়ে আকাশে উড়তে পারে। মানে ১১৫টি প্রাপ্তবয়স্ক হাতির ওজনের সমান। তা ছাড়া একবার জ্বালানি ভরে টানা ১৫ হাজার ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে পারে। মানে কোনো এয়ারপোর্টে না থেমেই সরাসরি লন্ডন থেকে সিডনিতে পৌঁছে যেতে পারবে। আরও স্পষ্ট করে বললে, এই প্লেনে একবার জ্বালানি নিলেই টানা ২৫ বার ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়া এবং আসা যাবে।
চার ইঞ্জিনবিশিষ্ট এই বিমান শ্রেণিভেদে ৫২৫ থেকে ৮৫৩ জন যাত্রী বহন করতে পারে। অন্যান্য বিমানের তুলনায় ওড়ার সময় এটি কম শব্দ করে। ফলে যাত্রা আরও আনন্দদায়ক হয়। এ ছাড়া এ বিমানের মধ্যেই ব্যক্তিগত স্যুট, ঝরনা, বার, লাউঞ্জ, স্পা বা জিমের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় ৯০০ কিলোমিটার গতিতে চলার পরও এ বিমানে বসে কাজ করতে আপনার কোনো অসুবিধাই হবে না। অন্যান্য বিমানের তুলনায় এটায় আর্দ্রতার মাত্রাও বেশি থাকে। ফলে জেট ল্যাগ এবং ডিহাইড্রেশনের প্রভাব থাকে কম।
প্রযুক্তির দিক থেকেও বিমানটি বেশ উন্নত। এর চারটি শক্তিশালী ইঞ্জিন আছে এবং প্রতিটি ইঞ্জিন আলাদাভাবে কাজ করতে পারে; অর্থাৎ একটি ইঞ্জিন হঠাৎ অকেজো হয়ে গেলেও বাকিগুলো দিয়ে কাজ চলে যাবে। এর আরও অনেক জটিল প্রযুক্তি আছে। কিন্তু এ লেখায় তা ঊহ্য থাক।
বিমানটির কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৮ লক্ষবার যাতায়াত করে প্রায় ৩০ কোটি যাত্রী বহন করেছে। ৭৩ লাখ ঘণ্টার বেশি সময় উড়েছে আকাশে। চলাচলের সময় বিমানটির প্রতি ঘণ্টায় খরচ হয় ২৬ হাজার থেকে ২৯ হাজার ডলার। বাংলাদেশি টাকায় ২৮ লাখ থেকে ৩১ লাখ টাকা। এর মধ্যে জ্বালানি বাবদ খরচ হয় প্রায় ১৯ লাখ টাকা; অর্থাৎ বিমানটির প্রতি মাইল যেতে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকার জ্বালানির প্রয়োজন। আপনি যদি বিমানটি ভাড়া নিতে চান, তাহলে গড়ে প্রতি ঘণ্টায় গুনতে হবে প্রায় ৪০ লাখ টাকা। বিমানটির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৪৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন