মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

শুঁটকি

 

অবাকই হইলাম। কাওরানবাজারে খুচরা শুঁটকি দোকানদাররা ততক্ষণে উঠে গেছেন। যেহেতু রাত হয়ে গেছে। তো, আরও ভেতরে শুঁটকির আড়তেই গেলাম। বড় বড় দোকান সব। বড় দোকান বলতে বস্তা বস্তা শুঁটকির কালেকশন।
এক দোকানে চিংড়ি শুঁটকির খোঁজ নিলাম। আকারে, কালারে কোনটা কেমন দাম? কোনটা কোন এলাকার? একেক বস্তায় একেক ধরনের চিংড়ি শুঁটকি। যে বস্তার দিকেই ইংগিত করি, দোকানদার তরুণ কইলেন, ইন্ডিয়ান। শুধু এক ধরনের চিংড়ি দেশি মানে চট্টগ্রামের। আর বাকি চার-পাঁচ ধরনের চিংড়ি শুঁটকি সবই ইন্ডিয়ান।
সামনের যে বস্তায় চিংড়ি শুঁটকি দেখা যাইতেছে, এটাও ইন্ডিয়ান। কৌতুহলবশত পেছনের লইট্যা শুঁটকিটা কোথাকার জানতে চাইলাম। জানলাম, সেটাও ইন্ডিয়ান।
বাকি আরও কয়েকটা দোকানে গিয়া জিগাইলাম। একই ধরনের শুঁটকিগুলা দেশি কীনা ইন্ডিয়ান। তখন তারা স্পষ্ট করে কিছু বলে না। তবে কিছু শুঁটকি বার্মা বা মিয়ানমারের সেটাও জানলাম।
শুঁটকির দেশ চট্টগ্রামের মানুষ। কত প্রকার কত রকমের যে শুঁটকি খাওয়া হইছে ইয়াত্তা নাই। কিন্তু কখনো কল্পনাতেই আসে নাই, শুঁটকিও ইন্ডিয়া থেকে আসে।
এতদিনে একটা জট খুলল। চট্টগ্রামে যে কয় ধরনের শুঁটকি বিশেষ করে নানা ধরনের চিংড়ি শুঁটকি খাইতে আমরা অভ্যস্ত, সেরকম ঢাকাতে পাওয়া যায় না। ফলে মাঝেমধ্যে চিটাগং থেকে নিয়ে আসছি, আম্মা পুঁটলি করে অল্পস্বল্প বেধে দিতেন।
গত ৪-৫ বছর ধরে কাওরানবাজার থেকেই বাজার করি। এখানকার খুচরা-পাইকারি শুঁটকির দোকানে গিয়েও সেসব শুঁটকি পাই নাই। যেটা পাইতাম সেটা দিয়ে মূলত দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো হইত। এতদিন পর জানলাম, সেটাও ইন্ডিয়ান।
বিশাল সমুদ্র উপকূলের দেশে শুঁটকিও যদি ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করেই খাইতে হয়, এর থেকে হতাশাজনক আর কী আছে!

©Rafsan GAlib ভাই।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন